২০২৫ সালে বিটকয়েনের দামে বড় ধরনের পতন দেখা গেছে। রেকর্ড সর্বোচ্চ অবস্থান থেকে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সিটির মূল্য।
দুর্বল লেনদেন কার্যক্রম, গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল সাপোর্ট ভেঙে যাওয়া এবং দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগকারীদের ধারাবাহিক বিক্রিচাপ এই পতনের প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে।
বছরজুড়ে বিটকয়েনের দাম ৩৬৫ দিনের মুভিং অ্যাভারেজের নিচে নেমে যাওয়ার পর বিক্রির চাপ আরও বেড়ে যায়, যা বাজারে নেতিবাচক মনোভাব তৈরি করে। তবে মূল্যপতনের মধ্যেও ক্রিপ্টো বাজারের মৌলিক ভিত্তি শক্তিশালী হওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।
২০২৫ সালে ক্রিপ্টো ইকোসিস্টেমে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দেখা গেছে। বিকেন্দ্রীকৃত অর্থায়ন (ডি-ফাই) প্ল্যাটফর্মের বিস্তার অব্যাহত ছিল, পেমেন্ট ও সেটেলমেন্টে স্টেবলকয়েনের ব্যবহার বেড়েছে এবং একাধিক দেশ কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডিজিটাল মুদ্রা (সিবিডিসি) পরীক্ষামূলক প্রকল্পে অগ্রসর হয়েছে। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলসহ বিশ্বজুড়ে ব্লকচেইনভিত্তিক অ্যাপ্লিকেশন তৈরিতে ডেভেলপারদের সক্রিয়তাও উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
বছরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘স্ট্র্যাটেজিক বিটকয়েন রিজার্ভ’ গঠনের ঘোষণা ক্রিপ্টো বাজারে বড় আলোচনার জন্ম দেয়। এটি জাতীয় ও কৌশলগত পর্যায়ে বিটকয়েনের গুরুত্ব বাড়ার ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হয়। পাশাপাশি, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি জেনিয়াস অ্যাক্ট (GENIUS Act) পাস হওয়ায় ডলার-সমর্থিত স্টেবলকয়েনের জন্য স্পষ্ট নিয়ন্ত্রক কাঠামো তৈরি হয়, যা বাজারে আস্থা বাড়ায়।
ডিসেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের কমোডিটি ফিউচার্স ট্রেডিং কমিশন (CFTC) নিবন্ধিত ফিউচার্স এক্সচেঞ্জে স্পট ক্রিপ্টো পণ্য লেনদেনের অনুমতি দেয়, যা নিয়ন্ত্রক স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক অংশগ্রহণ বাড়াবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
সব মিলিয়ে, স্বল্পমেয়াদে চাপ থাকলেও উন্নত নিয়ন্ত্রণ, প্রাতিষ্ঠানিক আগ্রহ এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে ২০২৬ সালকে ক্রিপ্টো বাজারের সম্ভাব্য ঘুরে দাঁড়ানোর বছর হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
