
আন্তর্জাতিক বাজারে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটছে স্বর্ণের দাম। চলতি বছরের বাকি সময়ও এ ধারা বজায় থাকবে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। এমনকি ২০২৬ সালে মূল্যবান এ ধাতুটির দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা।
ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ইন্ডিয়া গোল্ড কনফারেন্সে অগমন্টের গবেষণাপ্রধান রেনিশা চেনানি বলেন, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দামের ঊর্ধ্বমুখী ধারা অব্যাহত থাকবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ডগুলোয় (ইটিএফ) এর চাহিদা বেড়ে চলেছে। তবে বর্তমানে স্বর্ণ কেনাবেচা হচ্ছে অনেক বেশি। ফলে স্বল্পমেয়াদে দাম কিছুটা কমে আসতে পারে। এরপর ২০২৬ সালে আবার নতুন রেকর্ড সর্বোচ্চে পৌঁছতে পারে মূল্যবান ধাতুটির দাম।
চলতি বছরের এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৪০ শতাংশ। গত বছরও মূল্যবান ধাতুটির দাম ২৭ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গিয়েছিল। স্পট মার্কেটে গতকাল স্বর্ণের দাম দশমিক ৩ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি আউন্সের মূল্য পৌঁছেছে ৩ হাজার ৬৮৮ ডলার ৪১ সেন্টে। এদিন লেনদেনের এক পর্যায়ে মূল্যবান ধাতুটির দাম রেকর্ড ৩ হাজার ৬৯৭ ডলার ৫ সেন্টে পৌঁছেছিল। এ সময় ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার মার্কেটে স্বর্ণের দাম দশমিক ২ শতাংশ বেড়ে আউন্সপ্রতি ৩ হাজার ৭২৬ ডলার ৭০ সেন্টে দাঁড়ায়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভের (ফেড) সুদহার কমানোর প্রত্যাশা, ভূরাজনৈতিক অস্থিরতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ব্যাপক ক্রয় ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা স্বর্ণের মূল্যবৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি। এবিসি রিফাইনারির নিকোলাস ফ্রাপেল বলেন, স্বর্ণের দাম আমাদের প্রত্যাশার চেয়ে দ্রুত বাড়ছে। ২০২৬ সালে আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলার ছাড়ানোর সম্ভাবনা প্রবল।
কনসালট্যান্সি মেটালস ফোকাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফিলিপ নিউম্যান বলেন, বছর শেষে স্বর্ণের দাম পৌঁছতে পারে আউন্সপ্রতি প্রায় ৩ হাজার ৮০০ ডলারে। তবে এর আগে কিছুটা কমতে পারে। আর ২০২৬ সালে স্বর্ণের দাম আউন্সপ্রতি ৪ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এদিকে রূপার বাজারেও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। শিল্প-কারখানায় ব্যবহার ও বিনিয়োগকারীদের বাড়তি চাহিদার কারণে ধাতুটির দাম ১৪ বছরের সর্বোচ্চে পৌঁছেছে। গতকাল প্রতি আউন্স রুপার দাম ৪২ ডলার ৭০ সেন্টে স্থিতিশীল ছিল।