জাপানি মোটরসাইকেল নির্মাতা কাওয়াসাকি নিয়ে এসেছে ঘোড়ার আদলে অদ্ভুত এক রোবটবাইক। এটি একটি চারপেয়ে রোবট, যাতে ঘোড়া, পাহাড়ি সিংহ আর মোটরসাইকেলের বৈশিষ্ট্য একসাথে মিলেছে।
কাওয়াসাকি জানায়, তাদের গবেষণা বিভাগে একদিন কেউ প্রশ্ন করেছিলেন—'যদি অল-টেরেইন গাড়ির নিচে চাকা না দিয়ে পা দিই?' সেখান থেকেই শুরু। কমফোর্ট জোনের বাইরে গিয়ে তারা বানিয়েছে কোরলিও—ভবিষ্যতের এক বাহন, যেখানে মানুষের বোধ, প্রযুক্তি আর প্রকৃতি একসঙ্গে চলবে।
২০২৫ সালের ওসাকা এক্সপোতে কোরলিও প্রথমবারের মতো দেখানো হয়। এটি একটি অফ-রোড চারপেয়ে রোবট, চলে হাইড্রোজেন ইঞ্জিনে। ইন্টারনেটে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে এর কম্পিউটার ভিডিও। এই ভিডিও ইতোমধ্যে ১১ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, কোরলিও ঘন জঙ্গলে দৌড়াচ্ছে, ফাঁকা মাঠ, গিরিখাদ লাফিয়ে পার হচ্ছে, বরফে হেঁটে চলেছে। কখনো 'লর্ড অব দ্য রিংস সিনেমা'-এর মতো দৃশ্য অনুকরণ করছে, আবার মনে করিয়ে দেয় বোস্টন ডায়নামিক্সের রোবট 'স্পট' কিংবা 'স্টার ওয়ার্স'-এর লুক স্কাইওয়াকারের ল্যান্ডস্পিডারের কথা।
কাওয়াসাকি বলছে, কোরলিও চালানোর অভিজ্ঞতা হবে অল-টেরেইন গাড়ি বা মোটরসাইকেলের মতোই। তবে এখানে চাকা নেই, চারটি পা দিয়ে চলে। প্রতিটি পায়ের সঙ্গে আছে বিশেষ জোড়া, যা ধাক্কা সহ্য করে এবং অসম জায়গার সঙ্গে মানিয়ে নেয়। পায়ের নিচে থাকে রাবারের হালকা (ফাটানো) খুর, যা ঘাস, পাথর, কাঁকরসহ বিভিন্ন জায়গায় ঠিকভাবে চলতে সাহায্য করে।
এই চারপেয়ে গঠন রাইডারকে সোজা এবং সামনের দিকে তাকানো অবস্থায় ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এর আরও কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে আছে স্বাধীনভাবে চলার জন্য পা, হাইড্রোজেন চালিত ইঞ্জিন এবং শরীরের ওজনের ভঙ্গিমা দেখে দিকনির্দেশনা বুঝে নেওয়া। স্টির্যাপস (পা রাখার জায়গা) ও হ্যান্ডেলে থাকা সেন্সরের মাধ্যমে এটি চালানো যায়। পেছনে রাখা হাইড্রোজেন ক্যানিস্টার থেকে জ্বালানি নিয়ে একটি ১৫০ সিসি ইঞ্জিন বিদ্যুৎ তৈরি করে, যা দিয়ে এটি চলাচল করে। শব্দহীন আর কম দূষণের বাইকটি পরিবেশবান্ধব। এতে আছে জিপিএস স্ক্রিন, যা রাস্তা, জ্বালানির পরিমাণ বোঝা এবং রাইডারের ভারসাম্য ঠিক রাখা যায়।
