প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে পর্যায়ক্রমে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। এসব অর্থনৈতিক অঞ্চলে ২৭ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব পাওয়া গেছে।
রোববার গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে ইন্টারন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট সামিট উদ্বোধন করে তিনি এ কথা বলেন। এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস সামিটের মধ্য দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের বিনিয়োগ বাজার তৈরি হবে।
আমাদের মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ মার্কিন ডলার উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, অর্থনৈতিক উন্নয়ন মাথায় রেখে সরকার অর্থনৈতিক কূটনীতিকে প্রাধান্য দিচ্ছে। আমরা বিনিয়োগের জন্য ১১টি খাত চিহ্নিত করেছি। এগুলো হলো: অবকাঠামো, পুঁজিবাজার ও ফাইন্যান্সিয়াল সেবা, তথ্য-প্রযুক্তি, ইলেক্ট্রনিকস, চামড়া, স্বয়ংক্রিয় ও হালকা প্রকৌশল, কৃষিপণ্য ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্বাস্থ্যসেবা ও ওষুধ এবং ব্লু - ইকোনমি।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, এই সম্মেলনের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে এসব খাতের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। বিশ্বে বাংলাদেশি পণ্যের নতুন বাজার সৃষ্টি হবে এবং বাংলাদেশ কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগ আকর্ষণে সক্ষম হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২৫ সালের মধ্যে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আইটি পণ্য রপ্তানির লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। আমরা ৩৯টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ করেছি। মীরসরাই, সোনাগাজী ও সীতাকুণ্ড উপজেলায় 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী’ গড়ে তুলছি। আড়াইহাজারে জাপানিজ অর্থনৈতিক অঞ্চলে এক বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বে এখন উন্নয়নের রোল মডেল। আমরা এসডিজি প্রেমেস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছি। দেশে ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের ১২ কোটির বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞান সম্পন্ন দক্ষ জনবল সৃষ্টির মাধ্যমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব থেকে সর্বোচ্চ সুবিধা আহরণের প্রস্তুতি নিচ্ছি। মহাকাশে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ উৎক্ষেপণ করেছি। পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সমাপ্তির পথে। ঢাকায় মেট্রোরেল ও এক্সপ্রেসওয়ে এবং হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল, সৈয়দপুরে আঞ্চলিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী টানেল এবং মাতারবাড়ি ও পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছি। আমাদের অর্থনীতির আকার এখন ৪১১ বিলিয়ন ডলার, বৈদেশিক মুদ্রার বিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলার। রূপকল্প -২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বাংলাদেশ বদ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ বাস্তবায়ন করছি।
উল্লেখ্য, রাজধানীর রেডিসন হোটেলে শুরু হওয়া এই সম্মেলন শেষ হবে সোমবার (২৯ নভেম্বর)। এর আগে ২০১৬ সালে ঢাকায় এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।