
বাংলাদেশের টেলিকম খাতে ‘আইসিএক্স’ (Interconnection Exchange) ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ নিয়ে চলমান বিতর্কের প্রেক্ষিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আইসিএক্স অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ আইসিএক্স অপারেটরস অফ বাংলাদেশ (এআইওবি)।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, ভয়েস ট্রাফিকের জন্য কেন্দ্রীয় আন্তঃসংযোগ ব্যবস্থা হিসেবে আইসিএক্স গত প্রায় দেড় দশক ধরে স্বচ্ছতা, নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও দেশীয় বিনিয়োগ সংরক্ষণের মাধ্যমে একটি স্থিতিশীল অবকাঠামো গড়ে তুলেছে।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির শফিকুল কবির মিলনায়তনে অ্যাসোসিয়েশন অফ আইসিএক্স অপারেটরস অফ বাংলাদেশ (এআইওবি)-এর পক্ষ থেকে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন সংগঠনটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে নেতারা বলেন, ভয়েস স্তরে সরলীকরণের নামে যে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে, তা বাস্তবতা বিবর্জিত এবং জাতীয় নিরাপত্তা, আয়কর রাজস্ব, দেশীয় উদ্যোক্তাদের ভবিষ্যৎ এবং সাধারণ গ্রাহকের কল সেবার মান-তিনটি ক্ষেত্রেই নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বর্তমানে অবৈধ ভিওআইপি, কল রেট বৃদ্ধি ও কল ড্রপের সমস্যা আইসিএক্স নয়, বরং মোবাইল অপারেটরদের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক কাঠামো ও বাজার নিয়ন্ত্রণের কারণে হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই খাতে টেকনোলজির উন্নয়নের জন্য ১৩০ কোটি বিনিয়োগ করা হয়েছে, যা আগামী এক দশক সেবা দেওয়ার মতো সক্ষম। সেই সাথে এই খাতে ইতোমধ্যেই প্রায় ৫০০ জনের বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি ২০২৪ সালে বিটিআরসির নির্দেশনায় আইপি টেকনোলজি উন্নয়ন ও এসএমএস ইন্টারকানেকশনর জন্য ১৩০ কোটি টাকার দেশীয় বিনিয়োগ হয়েছে। এটি তুলে দিলে কর্মসংস্থানের ওপর বড় আঘাত আসবে এবং ইতিবাচক বিনিয়োগ প্রবণতা থমকে যাবে বলে মনে করে এআইওবি।
বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট নীতিনির্ধারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে সংগঠনটির নেতারা বলেন, টেলিকম খাতে যেকোনো সংস্কার বাস্তব পরিস্থিতি ও অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে হয়। আমাদের দাবি হলো বর্তমান আইসিএক্স-ভিত্তিক ব্যবস্থাকে আরও আধুনিকায়ন এবং সুশৃঙ্খল করতে হলে তা করা হোক, তবে এটি বাতিল করে পুরো সেক্টরকে নৈরাজ্যে ঠেলে দেওয়া আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।
টেলিকম ইনফ্রাস্ট্রাকচার অপারেটস অফ বাংলাদেশ (টিআইওবি)-এর প্রেসিডেন্ট ও অ্যাসোসিয়েশন অফ আইসিএক্স অপারেটরস অফ বাংলাদেশ (এআইওবি)-এর পরিচালক ব্রিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোস্তাফিজুর রহমান (অব.)-এর সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এআইওবির জেনারেল সেক্রেটারি লেফটেন্যান্ট কর্নেল আমিনুর রহমান (অব.), এআইওবি-এর কোষাধ্যক্ষ ও জীবনধারা সলিউশন লি. এর গ্রপ সিইও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. খুরশিদ আলম (অব.), প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ আহমেদ উর রহমান (রোমেল)।