২০১০ সালের দীর্ঘ মন্দার পর গত এক বছর পুঁজিবাজার ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। এ সময়ে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের বিচরণ বাড়ার সঙ্গে বেড়েছে লেনদেন ও শেয়ারের দর। আলোচ্য সময়ে লোকসানি কোম্পানির তালিকাও দীর্ঘ হয়েছে। যা স্থিতিশীল পুঁজিবাজারের জন্য কোনভাবেই ইতিবাচক নয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গত এক বছরে পুঁজিবাজারে অনেক সংস্কার কার্যক্রম বাস্তবায়িত হয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে স্বচ্চতা, জবাবদিহিতা ও গুড গর্ভনেন্স তৈরিতে দৃশ্যমান অনেক অগ্রগতি হয়েছে। তারপর ফাঁক-ফোঁকর গলিয়ে তালিকাভুক্ত অসাধু কোম্পানিগুলোর অনিয়ম ও স্বেচ্চাচারিতা অনেক বেড়েছে। যে কারণে পুঁজিবাজারে লোকসানি কোম্পানির কাতার দীর্ঘ হচ্ছে।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এসব লোকসানি কোম্পানির লোকসানের পাল্লা ভারি হলেও কোম্পানিগুলোর শেয়ার দর আচমকা আকাশচুম্বী হয়ে যায়। একটি অসাধু গোষ্ঠি এসব লোকসানি কোম্পানির শেয়ার নিয়ে বছরজুড়েই কারসাজিতে লিপ্ত। কোম্পানিগুলোর মধ্যে কিছু কিছু কোম্পানি কারসাজিকারিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হঠাৎ করে মুনাফার চমকও দেখায়। তারপর উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেলে ফের লোকসানে ডুবে যায়।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩০ জুন, ২০২০ সাল পর্যন্ত পুঁজিবাজারে লোকসানি কোম্পানির সংখ্যা ছিল ৩৮টির মতো। গত এক বছরে আরও ২৩টি মুনাফায় থাকা কোম্পানি নতুন করে লোকসানের খাতায় নাম লেখিয়েছে। কোম্পানিগুলো হলো-আফতাব অটোমোবাইল, আজিজ পাইপ, বাটা সু, ফাইন ফুড, জেমিনি সী ফুড, গোল্ডেন হার্ভেস্ট, জিকিউ বলপেন, হাক্কানী পাল্প, হামিদ ফেব্রিক্স, খান ব্রাদার্স, নর্দার্ন জুট, ন্যাশনাল টি, ন্যাশনাল টিউবস, প্রাইম টেক্স, রিজেন্ট টেক্সটাইল, রেনউইক যজেনশ্বর, আরএসআরএম স্টিল, সাফকো স্পিনিং, শেফার্ড ইন্ডাষ্ট্রিজ, স্ট্যন্ডার্ড সিরামিক, স্টাইলক্রাপ্ট, ইউনিক হোটেল ও ইয়াকিন পলিমার।
আলোচ্য ২৩টি নতুন কোম্পানি ছাড়াও আরও ৩৮টি কোম্পানি আগের থেকেই লোকসানের তালিকায় ছিল। এরমধ্যে কিছু কোম্পানি ২০১৯ সালের পর লোকসানের তালিকায় অর্ন্তভুক্ত হয়েছে। তবে বেশিরভাগ কোম্পানিই লোকসানি কোম্পানির স্থায়ী তকমা নিয়ে পুঁজিবাজারে দীর্ঘদিন যাবত লেনদেন করছে।
পুরাতন ৩৮টি লোকসানি কোম্পানি হলো- অলটেক্স, এটলাস বাংলাদেশ, অ্যাপেলো ইস্পাত, এটলাস বাংলাদেশ, বিডি সার্ভিস, বিচ হ্যাচারি, বিআইএফিসি ফাইন্যান্স, সিভিও পেট্রো, ঢাকা ডাইং, দেশবন্ধু পলিমার, দেশ গার্মেন্টস, দুলামিয়া কটন, ইভিন্স টেক্সটাইল, ইস্টার্ন কেবলস, ফ্যামিলি টেক্স, ফার কেমিক্যাল, ফারইস্ট ফাইন্যান্স, এফএএস ফাইন্যান্স, ফার্স্ট ফাইন্যান্স, জেনারেশন নেক্সট, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং, ইমাম বাটন, জুট স্পিনার্স, খুলনা প্রিন্টিং, মেঘনা কনডেন্স মিল্ক, মেঘনা পেট, মিরাকল ইন্ডাষ্ট্রিজ, আরএন স্পিনিং, সমতা লেদার, সাভার রিফেকটরিজ, শ্যামপুর সুগার, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, তাল্লু স্পিনিং, ইউনিয়ন ক্যাপিটাল, উসমানিয়া গ্লাস, জাহিন স্পিনিং, জাহিন টেক্সটাইল, জিলবাংলা সুগার মিল।