
বিশ্ববাজারে স্বর্ণের দাম নতুন ইতিহাস গড়েছে। বুধবার (৮ অক্টোবর) প্রথমবারের মতো প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ৪ হাজার ডলার অতিক্রম করেছে। স্পট গোল্ড সকাল ০৪:৪২ জিএমটি সময় ০.৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ৪,০১৭.১৬ ডলারে, আর ডিসেম্বরে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফিউচার স্বর্ণের দামও বেড়ে হয় ৪,০৪০ ডলার প্রতি আউন্স।
বিশ্লেষকদের মতে, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা এবং মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভের সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা—এই তিনটি কারণ মিলেই স্বর্ণের দামে রেকর্ড উল্লম্ফন ঘটিয়েছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৫৩ শতাংশ, যা ২০২৪ সালের ২৭ শতাংশ বৃদ্ধিকেও ছাড়িয়ে গেছে।
স্বর্ণ সাধারণত অর্থনৈতিক বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচিত হয়। ধাতু বিশ্লেষক তাই ওয়াং বলেন, বাজারে এখন এত বেশি আস্থা তৈরি হয়েছে যে বিনিয়োগকারীরা পরবর্তী মাইলফলক—৫,০০০ ডলারের দিকে নজর রাখছেন। ফেড যদি সুদের হার আরও কমায়, তাহলে এই দামের সীমা অতিক্রমও অসম্ভব নয়।
বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি কার্যক্রম বন্ধ (শাটডাউন) সপ্তম দিনে প্রবেশ করেছে, যার ফলে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচক প্রকাশ বিলম্বিত হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীরা বিকল্প উৎসের তথ্যের ওপর নির্ভর করছেন, যা বাজারে আরও অনিশ্চয়তা তৈরি করছে। এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা নভেম্বর ও ডিসেম্বরে ফেডের পক্ষ থেকে আরও দুই দফা ২৫ বেসিস পয়েন্ট সুদহ্রাসের প্রত্যাশা করছেন।
বিশ্লেষকদের ধারণা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর স্বর্ণ কেনা, বিনিয়োগকারীদের ‘ফিয়ার অব মিসিং আউট’ মনোভাব এবং স্বর্ণভিত্তিক এক্সচেঞ্জ-ট্রেডেড ফান্ডে (ETF) প্রবাহ আগামী বছরেও স্বর্ণের দাম আরও বাড়াবে।
এদিকে, অন্যান্য মূল্যবান ধাতুর মধ্যেও ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। স্পট সিলভার ১.৩ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৮.৪৪ ডলারে। প্লাটিনাম বেড়েছে ২.৪ শতাংশ (১,৬৫৭.৩৩ ডলার) এবং প্যালাডিয়াম ২.৩ শতাংশ বেড়ে ১,৩৬৮.৬৮ ডলারে লেনদেন হচ্ছে।