
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের বছরে সর্বোচ্চ তিনটি উৎসাহ বোনাস দেওয়ার নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, এতদিন উৎসাহ বোনাস দেওয়ার ক্ষেত্রে পরিচালন মুনাফাকে ভিত্তি ধরা হলেও এখন থেকে নিট মুনাফার ওপর ভিত্তি করে এ সুবিধা দেয়া হবে। এজন্য ঋণ ও অগ্রিমের প্রভিশন, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য সম্পদের মূল্য হ্রাস-বৃদ্ধির প্রভিশন সমন্বয় করার পর নিট মুনাফার হিসাব করতে হবে।
কর্মসম্পাদন মূল্যায়নে ১০০ নম্বরের মধ্যে ৪০-এর কম পেলে কোনো বোনাস দেয়া হবে না। ৪০ থেকে ৫০ নম্বর পেলে একটি, ৫০ থেকে ৬০ পেলে দেড়টি, ৬০ থেকে ৭০ পেলে দুটি, ৭০ থেকে ৮০ পেলে আড়াইটি এবং ৮০-এর বেশি নম্বর পেলে তিনটি উৎসাহ বোনাস দেয়া হবে। একটি বোনাস বলতে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ বোঝাবে।
রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংক—সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, বেসিক ও বিডিবিএল—এর ক্ষেত্রে পাঁচটি সূচক বিবেচনায় নেয়া হবে। এগুলো হলো চলতি মূলধনের ওপর নিট মুনাফার হার, আমানত বৃদ্ধি, ঋণ ও অগ্রিম বৃদ্ধি, খেলাপি ঋণ আদায় এবং অবলোপনকৃত ঋণ আদায়। একইভাবে বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোও এসব সূচকেই মূল্যায়িত হবে। তবে ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ও হাউজ বিল্ডিং ফাইন্যান্স করপোরেশনের (বিএইচবিএফসি) জন্য সূচকে কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এর আগে অনেক ব্যাংক নির্ধারিত সীমার বাইরে বোনাস দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৩ সালে সোনালী ব্যাংক নিয়ম ভেঙে পাঁচটি বোনাস দিয়েছিল। এ ঘটনায় আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ব্যাংকের এমডিকে দুটি বোনাসের অর্থ ফেরত আনার নির্দেশ দিলেও কর্মীরা তা ফেরত দেননি।
নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনে বোনাস দেবে। আর বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো পরিচালনা পর্ষদের সুপারিশের পর আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অনুমোদন নিতে হবে।
তবে কোনো বছর নির্ধারিত নিয়মে বোনাস প্রাপ্য না হলেও বিশেষ অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে এক্স-গ্রেসিয়া ভিত্তিতে এক মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রদানের সুযোগ রাখা হয়েছে।