ঢাকা     ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়লো সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা

বিজটেক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৬:১২, ১২ জানুয়ারি ২০২১

ডিএসইর বাজার মূলধন বাড়লো সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মঙ্গলবারও মূল্য সূচকের ব্যাপক উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। আজ ডিএসই প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ১৪২ পয়েন্ট বা ২ শতাংশ বেড়ে ৫ হাজার ৮৬১ পয়েন্টে অবস্থান করছে; যা গত প্রায় ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থান সূচকটির। এর আগে ২০১৮ সালের ৯ এপ্রিল ডিএসই প্রধান মূল্য সূচকের অবস্থান ছিল ৫ হাজার ৮৭৯.৪১ পয়েন্ট। এই হিসাবে সূচকটি ২ বছর ৯ মাস বা প্রায় ৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে রয়েছে।

ছয় মাসের বেশি সময় ধরে শেয়ারবাজার ঊর্ধ্বমুখী ধারায় থাকলেও ২০২১ সালের শুরু থেকে ব্যাপক চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত মূল্য সূচক যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে লেনদেন। ২০১০ সালের মহাধসের পর শেয়ারবাজারে এমন তেজিভাব আর দেখা যায়নি।

মূল্য সূচকের বড় উত্থান দিয়ে নতুন বছরের প্রথম কার্যদিবস (৩ জানুয়ারি) শুরু হয় শেয়ারবাজারে। সেদিন প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান মূল্য সূচক ৪ শতাংশের উপরে বেড়ে যায়। বাজার মূলধন বেড়ে যায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। লেনদেন দুই হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি পৌঁছে যায়।

মঙ্গলবার লেনদেনের শুরু থেকেই একের পর এক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাতে থাকে। এতে হু হু করে বাড়তে থাকে মূল্য সূচক। একদিনেই ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স প্রায় আড়াই শতাংশ বেড়ে গেছে। যার উপর ভর করে দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে এসেছে সূচকটি।

দিনভর ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয়া ১৯৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১০৬টির। আর ৬১টির দাম কমেছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় একদিনে ডিএসইর বাজার মূলধন সাড়ে ১২ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গেছে।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। যা আগের দিন ছিল ৪ লাখ ৮১ হাজার ২৫১ কোটি টাকা। অর্থাৎ একদিনেই ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ১২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। মূলধন বাড়ার অর্থ হলো তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম সম্মিলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।

বড় অঙ্কের বাজার মূলধন বাড়ার পাশাপাশি সবকটি মূল্য সূচকের বড় উত্থান হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক আগের দিনের তুলনায় ১৪২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৮৬১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারির পর সূচকটি সর্বোচ্চ অবস্থানে উঠে আসল। ২০১৯ সলের ৩০ জানুয়ারি সূচকটি ৫ হাজার ৮৮৪ পয়েন্টে ছিল।

এদিকে প্রধান মূল্য সূচকের পাশাপাশি বড় উত্থান হয়েছে ডিএসইর অপর দুই সূচকের। এর মধ্যে ডিএসই-৩০ সূচক ৭১ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৯৪ পয়েন্টে উঠে এসেছে। আর ডিএসইর শরিয়াহ্ সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩২২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

সূচক এমন হু হু করে বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম হু হু করে বাড়তে থাকে। এতে দফায় দফায় দাম বাড়িয়েও অনেক কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারেননি কিছু বিনিয়োগকারী। দাম বাড়ার সীমার সর্বোচ্চ পর্যায়ের কাছাকাছি চলে যায় প্রায় দুই ডজন কোম্পানি।

এদিন এক শতাংশের ওপরে দাম বেড়ছে ১৫৭টির। এর মধ্যে ১১০টির দাম বেড়েছে ২ শতাংশের উপরে। ৪ শতাংশের উপরে দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে ৫০টি। ৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়ছে ৬ শতাংশের উপরে। আর ৯ শতাংশের উপরে দাম বেড়েছে ১৯টির।

মূল্য সূচক ও বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৯৮২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। যা আগের দিন ছিল ১ হাজার ৬৭৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৩০৭ কোটি ৩ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে ডিএসইতে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে লংকাবাংলা ফাইন্যান্সের শেয়ার। কোম্পানিটির ১১৯ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বেক্সিমকো ফার্মার ১১৪ কোটি ৬৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ১১১ কোটি ৩৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বেক্সিমকো।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে ডিএসইতে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাফার্জহোলসিম, আইএফআইসি ব্যাংক, সামিট পাওয়ার, পাওয়ার গ্রীড, আইডিএলসি ফাইন্যান্স, সাইফ পাওয়ার এবং স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস।