ঢাকা     ২৭ আগস্ট ২০২৫ ||  ১২ ভাদ্র ১৪৩২

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন কিভাবে? পর্ব–২: ডিজিটাল মার্কেটি

প্রকাশিত: ২৩:২৯, ২৬ আগস্ট ২০২৫

ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করবেন কিভাবে? পর্ব–২: ডিজিটাল মার্কেটি

ডিজিটাল যুগে প্রতিটি ব্যবসা অনলাইনে টিকে থাকতে চায়, আর সেই জায়গায় সবচেয়ে বড় চাহিদা তৈরি হয়েছে ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের। ফেসবুক বিজ্ঞাপন, গুগল অ্যাডস, ইমেইল মার্কেটিং, এসইও, কনটেন্ট মার্কেটিং কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট—সবকিছু মিলিয়ে আজকের দিনে ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি স্কিল, যা শেখা মানে নিজের জন্য বিশাল এক সুযোগের দরজা খোলা। ফ্রিল্যান্সিংয়ের বাজারে এটির চাহিদা সবসময়ই শীর্ষে থাকে।

কেন ডিজিটাল মার্কেটিং শিখবেন-

  • চাহিদা সবসময় বেশি – ছোট থেকে বড় সব ধরনের ব্যবসার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং অপরিহার্য।
  • লো-কস্ট স্কিল – গ্রাফিক্স ডিজাইন বা ওয়েব ডেভেলপমেন্টের মতো জটিল টুলস না শিখেও সহজে শুরু করা যায়।
  • দ্রুত রিটার্ন – নতুন ফ্রিল্যান্সাররাও সহজেই এন্ট্রি-লেভেল কাজ পেতে পারে।
  • দীর্ঘমেয়াদী সম্ভাবনা – অনলাইন ব্যবসা যত বাড়বে, তত বাড়বে ডিজিটাল মার্কেটারের চাহিদা।

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে কাজের ধরন-
সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং (SMM): ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, লিঙ্কডইনে ব্র্যান্ডের জন্য কন্টেন্ট প্ল্যান তৈরি ও বিজ্ঞাপন ম্যানেজমেন্ট।
সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO): ওয়েবসাইটকে গুগলের প্রথম পাতায় আনা।
পেইড অ্যাডভার্টাইজিং (Google Ads, Facebook Ads): টার্গেট অডিয়েন্স অনুযায়ী বিজ্ঞাপন সেটআপ।
ইমেইল মার্কেটিং: নিউজলেটার বা সেলস ক্যাম্পেইন তৈরি ও পাঠানো।
কনটেন্ট মার্কেটিং: ব্লগ, আর্টিকেল, ভিডিও বা ইনফোগ্রাফিকস ব্যবহার করে ব্র্যান্ড প্রমোশন।

শিখতে যা যা লাগবে-
বেসিক মার্কেটিং কনসেপ্টস: Target Audience, Customer Journey, Conversion Funnel।
টুলস ও প্ল্যাটফর্মস: Google Analytics, Google Ads, Facebook Business Manager, Mailchimp, SEMrush, Ahrefs।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মস: Facebook, Instagram, TikTok, LinkedIn, Twitter।

এসইও ও কনটেন্ট জ্ঞান-

  • Keyword Research, On-page SEO, Off-page SEO, Technical SEO।
  • ডিজাইন ও কনটেন্ট টুলস (বেসিক লেভেল)
  • Canva, Photoshop (ভিজ্যুয়াল তৈরি করার জন্য)।

শিখতে কত সময় লাগতে পারে-
বেসিক লেভেল (৩–৪ মাস): সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টিং, বিজ্ঞাপন বুস্টিং, কনটেন্ট প্ল্যানিং।
ইন্টারমিডিয়েট লেভেল (৬–৮ মাস): SEO, Google Ads, Facebook Ads, Analytics।
অ্যাডভান্সড লেভেল (১২ মাস): ক্যাম্পেইন স্ট্র্যাটেজি, অটোমেশন, ব্র্যান্ড ম্যানেজমেন্ট।

নতুনদের জন্য শুরু করার উপায়-
একটি নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন (যেমন Facebook Ads বা SEO)। ইউটিউব বা গুগলের ফ্রি কোর্স দিয়ে বেসিক শিখুন। ছোট প্রজেক্টে প্র্যাকটিস করুন (নিজস্ব পেজ/ব্লগ তৈরি করে কাজের ফলাফল বিশ্লেষণ করুন)। Fiverr/Upwork–এ ছোট কাজ দিয়ে শুরু করুন, যেমন– "Create Facebook Ads Campaign" বা "Do Basic SEO Audit"। এরপর ধীরে ধীরে বড় প্রজেক্ট নিন।

ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেসে প্রথম কাজ পাওয়ার টিপস-

  • প্রোফাইল সাজান: স্পষ্টভাবে লিখুন আপনি কোন সেবা দেবেন।
  • পোর্টফোলিও তৈরি করুন: প্র্যাকটিস প্রজেক্টের স্যাম্পল ব্যবহার করুন।
  • ছোট গিগ দিয়ে শুরু করুন: $10–$20 এর কাজ নিয়ে ফিডব্যাক সংগ্রহ করুন।
  • কাস্টম প্রোপোজাল লিখুন: ক্লায়েন্টের প্রজেক্ট বুঝে ডিটেইলসে উত্তর দিন।

ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও ক্যারিয়ার গ্রোথ-
ডিজিটাল মার্কেটিং শিখলে শুধু ফ্রিল্যান্সিং নয়, লোকাল কোম্পানিতেও সহজে চাকরি পাওয়া যায়। বড় মার্কেটিং এজেন্সিতে কাজের সুযোগ তৈরি হয়। অভিজ্ঞতা বাড়লে আপনি Digital Marketing Consultant বা Brand Strategist হতে পারবেন।

ডিজিটাল মার্কেটিং এমন একটি স্কিল যা সহজে শুরু করা যায়, দ্রুত কাজ পাওয়া যায় এবং দীর্ঘমেয়াদে এটি আপনার ক্যারিয়ারকে বহুদূর এগিয়ে নিতে পারে। ফ্রিল্যান্সিংয়ে যাত্রা শুরু করতে চাইলে এটি নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী স্কিল।