
বিশ্বজুড়ে কোটি কোটি ব্যবহারকারীর প্রিয় অপারেটিং সিস্টেম ‘উইন্ডোজ ১০’-এর জন্য বড় দুঃসংবাদ এনেছে মাইক্রোসফট। আগামী ১৪ অক্টোবর থেকে এই জনপ্রিয় সফটওয়্যারের জন্য কোনো ধরনের সাপোর্ট বা নিরাপত্তা আপডেট আর দেবে না প্রতিষ্ঠানটি। অর্থাৎ, ওই তারিখের পর উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের কম্পিউটার হ্যাকিংসহ নানা নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
২০১৫ সালে চালু হওয়া উইন্ডোজ ১০ গত এক দশক ধরে মাইক্রোসফটের সবচেয়ে ব্যবহৃত ও সফল অপারেটিং সিস্টেম। তবে কোম্পানিটি এখন তাদের নতুন সংস্করণ ‘উইন্ডোজ ১১’-এ ইউজারদের স্থানান্তরে উৎসাহিত করছে। মাইক্রোসফট জানিয়েছে, বিশ্বজুড়ে প্রায় ১৪০ কোটি কম্পিউটারে উইন্ডোজ ব্যবহার করা হচ্ছে, যার মধ্যে ৪৩ শতাংশ এখনো উইন্ডোজ ১০ নির্ভর।
তবে সমস্যা হলো—সব কম্পিউটারেই উইন্ডোজ ১১ চালানো সম্ভব নয়। অনেক ব্যবহারকারীর ডিভাইস হার্ডওয়্যারগত কারণে নতুন ওএসের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। ফলে, যারা উইন্ডোজ ১১-তে আপগ্রেড করতে পারবেন না, তাদের জন্য একমাত্র বিকল্প হলো “Extended Security Update (ESU)” প্রোগ্রাম। এর আওতায় ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত সীমিত নিরাপত্তা আপডেট পাওয়া যাবে। তবে এতে কোনো কারিগরি সহায়তা বা নতুন ফিচার যুক্ত হবে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ইউজাররা এই সুবিধা বিনামূল্যে পাবেন কিন্তু অন্যান্য অঞ্চলের ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীদের ৩০ ডলার এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ডিভাইসপ্রতি ৬১ ডলার ফি দিতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংগঠন পিআইআরজি (PIRG) মাইক্রোসফটের এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে। সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ পরিচালক নাথান প্রক্টর বলেন, উইন্ডোজ ১০-এর সাপোর্ট বন্ধ করা ভোক্তা ও পরিবেশ উভয়ের জন্য বিপর্যয় ডেকে আনবে। এতে অকারণে পুরনো কম্পিউটারগুলো বাতিল হবে এবং নতুন হার্ডওয়্যার কেনার চাপ তৈরি করবে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীদের এখনই সতর্ক হতে হবে। যারা আপগ্রেড করতে পারবেন, তাদের দ্রুত উইন্ডোজ ১১-এ স্থানান্তর করা উচিত। অন্যথায়, ১৪ অক্টোবরের পর থেকে তাদের ডিভাইসগুলো ভাইরাস, ম্যালওয়্যার এবং অন্যান্য সাইবার ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।