ঢাকা     ১০ অক্টোবর ২০২৫ ||  ২৫ আশ্বিন ১৪৩২

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

চামড়া শিল্প এক বিলিয়ন ডলারের ফাঁদে বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ১৬:৩৬, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

চামড়া শিল্প এক বিলিয়ন ডলারের ফাঁদে বাংলাদেশ

এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ চামড়া শিল্পে বার্ষিক রপ্তানিতে ১ বিলিয়ন ডলারের সীমা অতিক্রম করতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ পোশাকের পর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎপাদন খাত হিসেবেই এটি বিবেচিত হয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দীর্ঘদিনের অনিয়ম, বিনিয়োগ ঘাটতি ও কাঠামোগত দুর্বলতা এই খাতকে “এক বিলিয়ন ডলারের খাঁচায় বন্দি” করে রেখেছে। এর ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে ঘোষিত ৫ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্য অধরাই থেকে যাচ্ছে।

সংকটের মূল কারণ সাভার ট্যানারি শিল্প। সেখানে স্থাপিত সেন্ট্রাল ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট (সিইটিপি) সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়ায় এখনো অপরিশোধিত বর্জ্য নদীতে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ (এলডব্লিউজি) সার্টিফিকেশন অর্জন করতে পারছে না বাংলাদেশ। এই সনদ না থাকায় বিশ্ববাজারে প্রিমিয়াম ক্রেতাদের কাছে পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়েছে।

“বাংলাদেশের হাতে সব প্রতিযোগিতামূলক সুবিধা রয়েছে—কাঁচামাল, সস্তা শ্রমশক্তি, সরকারী প্রণোদনা। কিন্তু এলডব্লিউজি সার্টিফিকেটের অভাবই সবচেয়ে বড় অন্তরায়,” বলেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রেজা। “ভারতে ১৫০টির বেশি, পাকিস্তানে ৮০টিরও বেশি ট্যানারি এ সনদ পেয়েছে। 

এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চামড়া ২০–৩০% কম দামে বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা ক্রমশ বাংলাদেশ এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে উচ্চমূল্যের সমাপ্ত চামড়াজাত পণ্য রপ্তানির বদলে দেশ থেকে বেশি পরিমাণে কমদামী সেমি-প্রসেসড ওয়েট ব্লু রপ্তানি হচ্ছে।

শিল্প সংশ্লিষ্টরা আরও জানাচ্ছেন, খাতটির গভীরতর সমস্যা রয়েছে—দুর্বল অবকাঠামো, বিচ্ছিন্ন সরবরাহ ব্যবস্থা, পুরনো প্রযুক্তি, নগদ অর্থের সংকট, অপর্যাপ্ত সংরক্ষণ ও পরিবহন ব্যবস্থা এবং খণ্ডিত উৎপাদন চেইন। কোরবানির ঈদে কাঁচা চামড়ার ১৫–২০% পর্যন্ত নষ্ট হয়ে যায় যথাযথ সংরক্ষণ ও প্রযুক্তির অভাবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অবকাঠামো উন্নয়ন, সঠিক বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে অটল না থাকলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্প তার সম্ভাবনার ৮০ শতাংশ হারাতে থাকবে।