ঢাকা     ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  ৭ বৈশাখ ১৪৩১

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

হুন্ডির মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার

বিজটেক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ২০:৪৩, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২২

আপডেট: ২০:৩৮, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২২

হুন্ডির মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার

মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায় ব্যবহার করে গত এক বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা (৭.৮ বিলিয়ন ডলার) পাচার করেছে হুন্ডি ব্যবসায়ীরা। বিলিয়ন ডলারের এসব ডিজিটাল হুন্ডি কারবার করা ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এ বিষয়ে সিআইডি প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, ডলারের দাম বাড়ায় তদন্তে নামে সিআইডি। তদন্তে হুন্ডি কারবারের সঙ্গে জড়িত ১৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদে গত ৪ মাসে ২০ কোটি ৭০ লাখ টাকা পাচার হয়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া সিআইডির সাইবার ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হুন্ডি করে এমন ৫ হাজারের বেশি এজেন্টের সন্ধান পেয়েছে সিআইডি।

সিআইডি প্রধান, প্রাথমিক পর্যায়ে আমরা জানতে পারি তারা বিকাশ, নগদ, রকেট ও উপায়ের এমএফএস এজেন্ট। এ ৫ হাজার এজেন্ট গত ৪ মাসে ২৫ হাজার কোটি এবং বছরে ৭৫ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে।

তিনি আরো বলেন, রেমিট্যান্স বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণপ্রবাহ। সাম্প্রতিক বিশ্ব পরিস্থিতি এদেশের অর্থনীতির ওপর যে চাপ তৈরি করেছে তা মোকাবিলা করার জন্য সরকার অত্যন্ত তৎপর। হুন্ডি সবসময় রিজার্ভের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর এ ঝুঁকি মোকাবিলায় সিআইডি হুন্ডি কার্যক্রমের ওপর নজরদারি শুরু করে। অনুসন্ধানের মাধ্যমে জানা যায় যে, একটি সংঘবদ্ধচক্র হুন্ডির মাধ্যমে বিদেশে অর্থপাচার এবং বিদেশে অবস্থানরত প্রবাসীদের কষ্টার্জিত অর্থ বিদেশ থেকে বাংলাদেশে না এনে স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করার মাধ্যমে মানিলন্ডারিং অপরাধ করে আসছে।

সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র প্রবাসে বাংলাদেশিদের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা সংগ্রহ করে তা বাংলাদেশে না পাঠিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার সমপরিমাণ মূল্যে স্থানীয় মুদ্রায় পরিশোধ করে। এ কাজে অপরাধীরা তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কাজটি করে থাকে। প্রথম গ্রুপ বিদেশে অবস্থান করে প্রবাসীদের কাছ থেকে বৈদেশিক মূদ্রা সংগ্রহ করে, দেশ থেকে যারা টাকা পাচার করতে চান তাদের দেন। দ্বিতীয় গ্রুপ পাচারকারী ও তার সহযোগীরা দেশীয় মুদ্রায় এ অর্থ এমএফএস এজেন্টকে দেয়। তৃতীয় গ্রুপ তথা এমএফএস এজেন্টরা বিদেশে অবস্থানকারীর কাছ থেকে প্রাপ্ত মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস নম্বরে দেশীয় মূদ্রায় মূল্য পরিশোধ করে।

এসব চক্র প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে এমএফএস ব্যবহার করে ক্যাশ ইনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হুন্ডি করছে। এমএফএস এজেন্টদের সহযোগিতায় পাচারকারীরা বিদেশে স্থায়ী সম্পদ অর্জনসহ অনলাইন জুয়া, মাদক কেনা-বেচা, স্বর্ণচোরাচালান, ইয়াবা ব্যবসাসহ অবৈধ ব্যবসাও পরিচালনা করছে।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন— আক্তার হোসেন (হুন্ডি এজেন্ট), দিদারুল আলম সুমন (হুন্ডি এজেন্ট), খোরশেদ আলম ইমন (হুন্ডি এজেন্টের সহযোগী), রুমন কান্তি দাস জয় (বিকাশ এজেন্ট), রাশেদ মাঞ্জুর ফিরোজ (বিকাশ এজেন্ট), মোঃ হোসাইনুল কবির (বিকাশ ডিএসএস), নবীন উল্লাহ (বিকাশ ডিএসএস), মো. জুনাইদুল হক (বিকাশ ডিএসএস), আদিবুর রহমান (বিকাশ ডিএসও), আসিফ নেওয়াজ (বিকাশ ডিএসও), ফরহাদ হোসাইন (বিকাশ ডিএসও), আবদুল বাছির (বিকাশ এজেন্ট), মাহাবুবুর রহমান সেলিম (বিকাশ এজেন্ট), আবদুল আউয়াল সোহাগ (বিকাশ এজেন্ট) ও ফজলে রাব্বি (বিকাশ এজেন্ট)।

তাদের কাছ থেকে নগদ ১০ লাখ ৪৬ হাজার ৬৮০ টাকা, চারটি সিমে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৪৭ হাজার ২২৯ ইলেকট্রনিক মানি ও ৩৪টি মোবাইল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মোট চারটি মামলা করেছে সিআইডি।