বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানির বিল পরিশোধ ছাড়াও বেতন-ভাতা প্রদান, প্রবাসী আয় পাঠানোসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন দেশের মানুষের এখন পছন্দের শীর্ষে। কম খরচ ও দ্রুত দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে টাকা পাঠানোর সুযোগ তৈরি হওয়ায় মোবাইল ব্যাংকিং দেশের ব্যাংকিং সেবায় নতুন সম্ভাবনা এনে দিয়েছে। দেশের অর্থনীতিতে বিরাট এক গতি সঞ্চার করেছে এই সেবা। প্রতি মাসেই বাড়ছে এর গ্রাহকসংখ্যা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাস শেষে দেশে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত হিসাব দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৭৫ লাখ ২৩ হাজার ৫৯৩টি। আর শুধু অক্টোবরে মাসেই এই মাধ্যমে লেনদেন হয়েছে ৯৩ হাজার ১৩ কোটি টাকা।
তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ১০০ কোটি টাকা। যা সেপ্টেম্বরে ছিল ২ হাজার ৯২২ কোটি টাকা। এর আগের মাস অর্থাৎ আগস্টে গড়ে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন ছিল ২ হাজার ৯১৪ কোটি টাকা।
মোবাইলে আর্থিক সেবায় (এমএফএস) এক মাসে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ২৫ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় দুই হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ২৮৩ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটায় ৩ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা লেনদেন হয়।
সেপ্টেম্বর মাসে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হিসাব সংখ্যা ছিল ১৮ কোটি ৫২ লাখ ৫৭ হাজার ৯৩২টি। অর্থাৎ এক মাসের তুলনায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে ২২ লাখ ৬৫ হাজার ৬৬১টি। এর মধ্যে পুরুষ গ্রাহক ১০ কোটি ৮৬ লাখ ২১ হাজার ৮১৪ জন। অপরদিকে নারী গ্রাহক বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ৮৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩১৬ জনে। এছাড়া মোবাইল ব্যাংকিং এজেন্টের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার ৩টি। যার মাধ্যমে দিন দিন বাড়ছে কর্মসংস্থান।
বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। এরপর ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু। এরপর ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে নগদ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়সহ ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিচ্ছে।
