ঢাকা     ২৯ মার্চ ২০২৪ ||  ১৫ চৈত্র ১৪৩০

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

চাহিদা সর্বনিম্ন তবু লাগামহীন স্বর্ণের দাম

বিজটেক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৭:১০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২১

চাহিদা সর্বনিম্ন তবু লাগামহীন স্বর্ণের দাম

অর্থনীতির সূত্র অনুযায়ী কোনো পণ্যের চাহিদা বাড়লে সেই পণ্যের দামও বেড়ে যায়। তবে এর বিপরীত চিত্র দেখা গেছে স্বর্ণের বাজারে। গত ১১ বছরের সর্বনিম্ন অবস্থানে নেমে এসেছে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা তবে মূল্যবান ধাতুটির দাম কমেনি। উল্টো এ সময় দাম বেড়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেকর্ড ছুঁয়েছে স্বর্ণ।

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনাকালে আয় কমে যাওয়ায় বিশ্বজুড়ে অলংকার খাতে স্বর্ণের চাহিদা কম ছিল। এটা মূল্যবান ধাতুটির সামগ্রিক চাহিদা পতনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। তবে বিনিয়োগ হিসেবে বাড়তি চাহিদা বছরজুড়ে স্বর্ণের বাজার চাঙ্গা রেখেছিল।

ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের (ডব্লিউজিসি) বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা ছিল ৩ হাজার ৭৫৯ দশমিক ৬ টন। এক বছরের ব্যবধানে মূল্যবান ধাতুটির বৈশ্বিক চাহিদা কমেছে ১৪ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা চার হাজার টনের নিচে নেমে এসেছে। অর্থাৎ ১১ বছরের মধ্যে মূল্যবান ধাতুটির বৈশ্বিক চাহিদায় এটাই সবচেয়ে বড় পতন।

ডব্লিউজিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে অলংকার শিল্পে স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা ছিল ১ হাজার ৪১১ দশমিক ৬ টন। এক বছরের ব্যবধানে অলংকার শিল্পে মূল্যবান ধাতুটির চাহিদা ৩৪ শতাংশ কমেছে। একই চিত্র দেখা গেছে প্রযুক্তি খাত ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের চাহিদায়। ২০২০ সালে দেশে দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা ছিল ২৭২ দশমিক ৯ টন। এক বছরের ব্যবধানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোয় স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা রেকর্ড ৫৯ শতাংশ কমেছে। বৈশ্বিক প্রযুক্তি খাতে গত বছর স্বর্ণের সম্মিলিত চাহিদা ৩০১ দশমিক ৯ টনে দাঁড়িয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ডব্লিউজিসি, যা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ কম।

অলংকার, প্রযুক্তি ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক—তিন খাতে গত বছর স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদায় মন্দা ভাব দেখা গেলেও ব্যতিক্রম ছিল বিনিয়োগ খাত। মহামারীসহ যেকোনো সংকটময় পরিস্থিতিতে নিরাপদ বিনিয়োগ উৎস বা সেফ হ্যাভেন হিসেবে স্বর্ণের জনপ্রিয়তা বাড়ে। গত বছরও আন্তর্জাতিক বাজারে একই চিত্র দেখা গেছে। ডব্লিউজিসি বলছে, ২০২০ সালে বার ও কয়েন হিসেবে স্বর্ণের বৈশ্বিক চাহিদা দাঁড়িয়েছে ৮৯৬ টনে, যা আগের বছরের তুলনায় ৩ শতাংশ বেশি। একই সময়ে এক্সচেঞ্জ ট্রেডেড ফান্ড বা ইটিএফ হিসেবে মূল্যবান ধাতুটির বৈশ্বিক চাহিদা আগের বছরের তুলনায় বেড়ে ৮৭৭ দশমিক ১ টনে উন্নীত হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে ডব্লিউজিসি।

বিনিয়োগ হিসেবে বাড়তি চাহিদার জের ধরে গত বছরের আগস্টে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম ২ হাজার ৭২ ডলার ছাড়িয়ে যায়। ইতিহাসে এর আগে কখনই স্বর্ণের দাম এতটা ওঠেনি।