ঢাকা     ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  ১১ বৈশাখ ১৪৩১

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে ধামাকা, করছে অর্থপাচার!

বিজটেক ডেস্ক

প্রকাশিত: ১৪:২৬, ২৫ জুলাই ২০২১

আপডেট: ১৫:৪১, ২৫ জুলাই ২০২১

বৈধ লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবসা করছে ধামাকা, করছে অর্থপাচার!

অর্থপাচারের অভিযোগে দেশের শীর্ষ ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ধামাকা শপিংয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘ধামাকা শপিংয়ের কোন বৈধ লাইসেন্স নেই, এমনকি এটির নিবন্ধনও নেই।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমারা প্রমাণ পেয়েছি তারা গ্রাহকের টাকা সময় মতো সরবরাহ করেনি। এমনকি তারা গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নিলেও তাদের ব্যাংক একাউন্টে সেটা অনুপস্থিত।’

গত সপ্তাহে প্রাথমিক তদন্ত শেষে সিআইডি ধামাকার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিদেশ ভ্রমণের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চেয়েছিল। এমনকি সিআইডি এই প্ল্যাটফর্মের শীর্ষ কর্মকর্তাদের (উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজিম উদ্দিন, অফিস পরিচালক (অপারেশনস) সাফওয়ান আহমেদ, অ্যাকাউন্টস এবং ফিনান্স চিফ আমিনুর হোসেন, এবং সিইও সিরাজুল ইসলাম) জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিষিদ্ধের জন্য নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) চিঠিও পাঠিয়েছিল।

জাতীয় গ্রাহক অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ধামাকা সবচেয়ে কম অভিযোগ নিষ্পত্তি করেছে, যার হার ২৫.৬৭%।

ধামাকার একজন গ্রাহক জানান, তিনি তিন মাস আগে ২৩,৭৬৭ টাকার পণ্য অর্ডার করেছিলেন। কিন্তু এখনও তিনি তার পণ্য বুঝে পাননি।

এর আগে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান বলেছিলেন, ‘এ নিয়ে তদন্ত চলছে, আমরা কিছু কিছু প্রমাণও পাচ্ছি। তবে তদন্ত শেষ হওয়ার আগে আমি চূড়ান্তভাবে কিছু বলতে চাই না। আমি যদি বলি তারা টাকা পাচার করেছে, তাহলে কতো টাকা পাচার করেছে?- আপনি সে প্রশ্ন আবার করবেন। তাই আমি আপনাকে প্রশ্ন করার আগেই থামিয়ে দিচ্ছি।’

তদন্ত সংশ্লিষ্ট ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘ধামাকা ইতোমধ্যে তাদের অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ৫০ কোটি টাকা সরিয়েছে- তার  প্রমাণ মিলেছে। কোম্পানির বিজনেস মডেলেও সমস্যা রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে আমরা তথ্য চেয়েছিলাম। তথ্যগুলো এর মধ্যে আমাদের হাতে এসেছে। এখন সেগুলো যাচাই-বাচাই চলছে।’

সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, ডাবল ভাউচার, সিগনেচার কার্ড ও বিগ বিলিয়ন রিটার্নস এবং অস্বাভাবিক মূল্য ছাড়ের ফাঁদে ফেলে হাজার হাজার গ্রাহকদের প্রতারিত করছে। এই প্রতারিত অর্থ আত্মসাৎ করতে অবৈধভাবে দেশের বাইরে পাঠাচ্ছে।

ধামাকার মতো আরও কয়েকটি ই-কমার্স কোম্পানি গ্রাহকদের থেকে নেওয়া অর্থ অন্যান্য ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নিয়েছে বলে সিআইডির তদন্তে উঠে আসে।

প্রসঙ্গত, দেশের ১৪টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান নিয়ে নিজ উদ্যোগে তদন্ত শুরু করেছিল সিআইডি। তদন্তে ধামাকা, আলেশা মার্টসহ অন্তত পাঁচটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে সিআইডির প্রাথমিক তদন্তে নানা অনিয়ম উঠে এসেছে।

সিআইডির তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ‘আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে আলেশা মার্টসহ বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের টাকা প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে যাচ্ছে না। প্রতিষ্ঠানগুলোর পণ্য বিক্রির টাকা সরাসরি চলে যাচ্ছে বিভিন্ন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্ট অ্যাকাউন্টে।’ আলেশা মার্টে পণ্য বিক্রির টাকা সরাসরি একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মার্চেন্ট একাউন্টে যাওয়ার অকাট্য প্রমাণ পেয়েছেন সিআইডির তদন্ত কর্মকর্তারা।

সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন।