ঢাকা     ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  ১৪ চৈত্র ১৪৩০

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

আগে পণ্য পরে টাকা, ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা

বিজটেক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১২:৩৪, ১ জুলাই ২০২১

আপডেট: ১২:৪৭, ১ জুলাই ২০২১

আগে পণ্য পরে টাকা, ই-কমার্স নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা

নানামুখী বিতর্কের মুখে দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো। অভিযোগ আছে পণ্যের দাম আগেই পরিশোধ করা হলেও নির্ধারিত সময়েও গ্রাহকের পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত করছে না অনেক প্রতিষ্ঠান। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অন্তত ১০টি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটায় নিজেদের ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড গ্রাহকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বেশ কিছু ব্যাংক। 

তবে এবার ই-কমার্স নিয়ে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বুধবার প্রকাশিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান পণ্য সরবরাহের পর দাম পাবে। গ্রাহক থেকে সংগ্রহ করা অর্থে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো মার্চেন্টের দায় পরিশোধ ছাড়া অন্য কাজে খাটাতে পারবে না। এই লেনদেন নিষ্পত্তিতে মধ্যস্থতা করবে ব্যাংক, এমএফএস বা ইওয়ালেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। এছাড়া ক্যাশ অন ডেলিভারি পদ্ধতিতেও পণ্য বেচাকেনা অব্যাহত থাকবে। বাড়তি চার্জ ছাড়াই এসব সেবা দিতে হবে। 

এ-সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংক, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ও পেমেন্ট সার্ভিস অপারেটরের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা ও লেনদেন পদ্ধতি নিয়ে গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সে সভায় পণ্য সরবরাহের পরে মূল্য পরিশোধ করাসহ এ বিষয়ে নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত হয়। এদিকে, বুধবারও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা হয়েছে। এতে অর্ডার নেওয়ার পর কোনো কোনো ক্ষেত্রে পাঁচ দিন এবং কিছু ক্ষেত্রে সাতদিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে নীতিমালা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ সার্কুলার জারি করেছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ক্রমবিকাশমান ডিজিটাল কমার্সের মূল্য পরিশোধে ব্যাংক, পিএসও, এমএফএস ও পিএসপিগুলো সেবা দিচ্ছে। লক্ষ্য করা যাচ্ছে, গ্রাহক অর্থ পরিশোধের পরও অনেকের পণ্য পেতে দেরি হচ্ছে বা পাচ্ছেন না। এতে গ্রাহক ও পরিশোধ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে, যা ডিজিটাল কমার্স সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর গ্রাহকের আস্থার সংকট তৈরি করছে।

সার্কুলারে বলা হয়েছে, ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের (মার্কেটপ্লেস) ইস্যু করা ভাউচারের বিপরীতে পণ্য ক্রয় বা সেবা গ্রহণ না করা পর্যন্ত অর্থ ছাড় করা যাবে না। ভাউচার ইস্যুকারী প্রতিষ্ঠানের দাবি করা খরচের অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে সমপরিমাণ অর্থ ছাড় করা যাবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, যেসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষণিক কিংবা পণ্যভেদে সর্বোচ্চ পাঁচ দিন ও সাত দিনের মধ্যে পণ্য সরবরাহ করে তাদের পরিশোধকারী প্রতিষ্ঠান নিজস্ব বিবেচনায় লেনদেন ব্যবস্থা ঠিক করবে। খাদ্য, মুদি, ওষুধ, রাইড শেয়ারিং, মোবাইল রিচার্জ, সেবা সরবরাহকারী বা ইউটিলিটি, শিক্ষা ফি, হোটেল বুকিং, টিকিটিং কিংবা এ ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় ও জরুরি পণ্য বা সেবা সরবরাহকারী যেসব প্রতিষ্ঠান অর্ডারের সর্বোচ্চ পাঁচ দিনের মধ্যে সরবরাহ করে এবং যেসব প্রতিষ্ঠান নিজস্ব উৎপাদিত পণ্য ও সেবা ট্রেড লাইসেন্স থাকা দোকান বা শোরুমে বিক্রির পাশাপাশি ডিজিটাল কমার্স ব্যবস্থায়ও অর্ডারের সর্বোচ্চ সাতদিনের মধ্যে সরবরাহ করে, তাদের সঙ্গে এ নিজস্ব সেটেলমেন্ট ব্যবস্থায় যেতে পারবে পরিশোধ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। তবে উভয় ক্ষেত্রে পরিশোধ সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের লেনদেনের ঝুঁকি, গ্রাহকসেবার মান, পণ্য বা সেবা সরবরাহ সম্পর্কে সন্তুষ্টি এবং পারস্পরিক ব্যবসায়িক সম্পর্ক পর্যালোচনা করে সেটেলমেন্ট প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখতে পারবে।