ঢাকা     ২৮ মার্চ ২০২৪ ||  ১৪ চৈত্র ১৪৩০

Biz Tech 24 :: বিজ টেক ২৪

জামানত ছাড়া ১ কোটি টাকা ঋণ পাবে নতুন উদ্যোক্তারা

বিজটেক রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৭:০৮, ৩১ মার্চ ২০২১

জামানত ছাড়া ১ কোটি টাকা ঋণ পাবে নতুন উদ্যোক্তারা

তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে দীর্ঘদিন ঝুলে থাকা ‘স্টার্ট-আপ’ তহবিল অবশেষে আলোর মুখ দেখল। নিজস্ব অর্থে ৫০০ কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠনের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তাদের পাশে দাঁড়ানোর কার্যক্রম শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগ থেকে স্ট্যার্ট-আপ ফান্ড গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, আপাতত ৫০০ কোটি টাকা দিয়ে স্টার্ট-আপের জন্য গঠিত পুনঃঅর্থায়ন তহবিলের সূচনা হলো। তবে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এ তহবিলের আকার বড় করা হবে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তহবিলের পাশাপাশি প্রতিটি তফসিলি ব্যাংককে নিজস্ব উদ্যোগে স্টার্ট-আপ তহবিল গঠন করতে হবে। ২০২০ সালের পরিচালন মুনাফা থেকে ১ শতাংশ তহবিল স্থানান্তরের মাধ্যমে ব্যাংকগুলো এ তহবিলের সূচনা করবে। ২০২১ সাল পরবর্তী পাঁচ বছর পরিচালন মুনাফা থেকে ১ শতাংশ করে স্টার্ট-আপ তহবিলে সংরক্ষণ করবে ব্যাংকগুলো।

বিশেষ এ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ সুদে ঋণ পাবেন নতুন ও সৃজনশীল উদ্যোক্তারা। পাঁচ বছরের জন্য নেয়া ঋণে এক বছর গ্রেস পিরিয়ড থাকবে। ২১ থেকে ৪৫ বছর বয়সের উদ্যোক্তারা স্টার্ট-আপ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন। একজন উদ্যোক্তা তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা। বিশেষ এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে কোনো সম্পদ ব্যাংকের কাছে জামানত রাখতে হবে না। উদ্যোক্তার ব্যক্তিগত গ্যারান্টি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ অথবা কারিগরি প্রশিক্ষণের সনদ এক্ষেত্রে ঋণের জামানত হিসেবে বিবেচিত হবে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, উদ্যোগটি সম্পূর্ণ নতুন ও সৃজনশীল হতে হবে। এক্ষেত্রে সৃজনশীলতার মাপকাঠি কী? এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসএমই অ্যান্ড স্পেশাল প্রোগ্রামস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক হুসনে আরা শিখা বলেন, উদ্যোক্তাদের প্রস্তাবগুলো যাচাই-বাছাই করবে তফসিলি ব্যাংকগুলো। এক্ষেত্রে নতুনত্ব ও সৃজনশীলতার বিষয়টিও বিনিয়োগকারী ব্যাংক নির্ধারণ করবে। তবে স্টার্ট-আপ ফান্ডের কোনো অপব্যবহার যাতে না হয়, তা বাংলাদেশ ব্যাংকের পর্যবেক্ষণে থাকবে।

প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যোক্তাদের উদ্যোগের অনুকূলে ব্যাংকঋণ সহজলভ্য হলে অনেক সম্ভাবনাময় ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যোগকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হবে। বিশ্বের অনেক দেশেই ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যোগ যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতায় সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। বাংলাদেশেও সম্ভাবনাময় ‘স্টার্ট-আপ’ উদ্যোগ পৃষ্ঠপোষকতা পেলে কর্মসংস্থানসহ দেশের অর্থনীতির অগ্রগতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। সহজলভ্য ব্যাংকঋণ প্রদানের মাধ্যমে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি এবং স্ব-কর্মসংস্থান উৎসাহিত করা আবশ্যক বিবেচনায় দুটি ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এগুলো হলো বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ নামে ৫০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন তহবিল গঠন এবং তফসিলি ব্যাংকগুলোর বার্ষিক পরিচালন মুনাফা থেকে ১ শতাংশ অর্থ স্থানান্তরপূর্বক নিজস্ব ‘স্টার্ট-আপ ফান্ড’ গঠন।

প্রস্তাব দাখিলের সময় উদ্যোক্তার বয়স কমপক্ষে ২১ থেকে সর্বোচ্চ ৪৫ বছর হতে হবে বলে নীতিমালায় শর্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রস্তাবিত প্রকল্পে উদ্যোক্তাকে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকতে হবে। সিআইবি রিপোর্ট অনুযায়ী আগ্রহী উদ্যোক্তা কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে ঋণখেলাপি হলে, তিনি এ তহবিল থেকে ঋণ নিতে পারবেন না। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ পাঁচ বছর। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্ক এবং স্টার্ট-আপ উদ্যোগের ধরন বিবেচনায় গ্রেস পিরিয়ড নির্ধারণ করা যাবে; তবে তা এক বছরের বেশি হবে না। ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যে ত্রিমাসিক বা ষাণ্মাসিক ভিত্তিতে কিস্তি নির্ধারণ করা যাবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

বিশেষ তহবিল থেকে ঋণের সুদহার বিষয়ে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুদে অংশগ্রহণকারী ব্যাংকগুলো অর্থ পাবে। এ তহবিলের আওতায় ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত পুনঃঅর্থায়নের অর্থ বা এর কোনো অংশ সদ্ব্যবহার হয়নি মর্মে প্রতীয়মান হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমাণ অর্থের ওপর সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছ থেকে অতিরিক্ত ২ শতাংশ সুদসহ এককালীন আদায় করা হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণের বার্ষিক সরল সুদ হার হবে সর্বোচ্চ ৪ শতাংশ।