সমুদ্র অর্থনীতির দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় দ্রুত এগিয়ে চলছে পায়রা বন্দরের নির্মাণকাজ। অধিগ্রহণ করা জমিতে গড়ে উঠছে একের পর এক স্থাপনা। কর্তৃপক্ষের প্রত্যাশা, পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৩ সালে বন্দরটি পুরোপুরি চালু হলে খুলে যাবে সম্ভাবনার নতুন দ্বার। বিশাল অংকের রাজস্বের পাশাপাশি উন্নতি হবে প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কও।
পটুয়াখালীর আন্দারমানিক নদীর পাড়ে ১০০ একর জায়গার ওপর সাড়ে ৬০০ মিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। তৈরি হচ্ছে মাটির ওপরে ২২ মিটার ও নিচে ৪৮ মিটারের মোট এক হাজার ৩৯১ টি স্টিল পাইলিংয়ের পোক্ত পিলার।
নদীর ৯০ মিটার ভেতরে মূল টার্মিনালে একই সঙ্গে পণ্য খালাসের সুযোগ মিলবে ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের তিনটি জাহাজের। একটি টার্মিনালে বছরে ১১০টি জাহাজ ভিড়তে পারবে, হবে আট লাখ টিইইউএস কন্টেইনার খালাস। এই ধারণক্ষমতার টার্মিনাল হবে মোট ৫টি। আয়তনের দিক থেকে যা হবে চট্টগ্রাম বন্দরের তিনগুণ।
পায়রা বন্দর প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক মো. নাসির উদ্দিন বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে আমাদের কাজ শেষ হবে। এখন পর্যন্ত আমাদের অগ্রগতি ১২ শতাংশ। আর ২০২৩ থেকে নিয়মিত বড় জাহাজ ভিড়তে পারবে। এরই মধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে প্রায় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার শেখ হাসিনা সংযোগ সড়ক। নির্মিত হয়েছে প্রশাসনিক ভবনও। সাড়ে ৬ হাজারের মধ্যে এক হাজার ২২২ কোটি টাকায় অধিগ্রহণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৭৮১ একর জমি।
পায়রা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কমডোর হুমায়ুন কল্লোল বলেন, কার্যক্রম শুরুর পরে গত চার বছরে পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বন্দর থেকে ২৫৩ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে। ২০১৬ সালের ১৩ আগস্ট সীমিত আকারে পায়রা বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ১০৬টি জাহাজ নোঙর করেছে। যার মাধ্যমে সরকারের ২৫৩ কোটি টাকার রাজস্ব আয় হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর অনেক আগেই তৈরি হয়েছে। যেহেতু পায়রা বন্দর এখন তৈরি হচ্ছে সে জন্য এটি আধুনিক বন্দর হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী নদীপ্রবাহ ঠিক রাখতে ক্যাপিটাল ও রক্ষণাবেক্ষণ ড্রেজিং, কোল টার্মিনাল, কন্ট্রেইনার টার্মিনাল এক ও দুইসহ ১২টি সুবিধা নিশ্চিত করবে নৌ মন্ত্রণালয়।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এখানে আমাদের এখন পর্যন্ত ১৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। আমাদের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে, ২০৩৫ সালে ব্রেক ইভেন্টে যাওয়া।